
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম: বাস্তবতা নাকি অতিরঞ্জন?
বর্তমান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উদ্বেগজনক খবর প্রকাশিত হচ্ছে। তবে আমার অভিজ্ঞতায় বাজারে অনেক পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে দাম কমেছে বলেও মনে হয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বাজারের প্রকৃত চিত্র কতটা পরিবর্তিত হয়েছে, তা নিয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরছি।
বাজারের দাম: ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা চালের ক্ষেত্রে, যেমন মিনিকেট চালের দাম পূর্বে প্রতি ২৫ কেজিতে ১,৭৫০-১,৮০০ টাকা ছিল, আজকে সেটি কিনলাম ১,৭০০ টাকায়। অন্যদিকে পোলাওর চাল, যা আগে কিনেছি প্রতি কেজি ১৪৫ টাকায়, আজ সেটি ১৪০ টাকায় কিনেছি। ডিমের দামও একই রকম রয়েছে—আগে প্রতি হালি ৫০-৫৫ টাকায় কিনেছি, মাঝে মাঝে ৬০ টাকায়ও কিনেছি, আর আজও ৬০ টাকায় পেয়েছি।
ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রে, আগে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল কিনেছি ২১০ টাকায়, বর্তমানে সেটি ১৭০ টাকায় কিনতে পেরেছি। মুসুরির ডালের দামও স্থিতিশীল আছে—দেশি মুসুরির ডাল পূর্বে প্রতি কেজি ৯৩-৯৫ টাকায় কিনেছি, আজও সেটি ৯৪ টাকায় কিনেছি। ময়দার দামও পরিবর্তিত হয়নি; প্রতি কেজি ৫৫ টাকায় ময়দা আগে কিনেছি, এখনো একই দামে পাচ্ছি।
সিন্ডিকেটের প্রভাব ও মুনাফাখোরদের কার্যকলাপ দামের ওপর প্রভাব ফেলার অন্যতম কারণ হলো বাজারে সিন্ডিকেটের প্রভাব। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিমভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়ে লাভের জন্য ক্রেতাদের ক্ষতিগ্রস্ত করছেন। উদাহরণস্বরূপ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে পরিদর্শন করে দেখেছেন যে কিছু ব্যবসায়ী ডিম কিনছেন প্রতি পিস মাত্র ১১ টাকায়, অথচ বিক্রি করছেন ১৫ টাকায়। এতে সরাসরি ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং বাজারে মুনাফাখোরদের প্রভাব স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে।
বাজারে মূল্যবৃদ্ধির জন্য এই ধরনের সিন্ডিকেটের ভূমিকা অনেক সংবাদ মাধ্যম তুলে ধরলেও, কিছু সংবাদমাধ্যম পুরো দায় সরকারের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে, যা আসলে দৃষ্টি কটু। এখানে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে প্রকৃত পরিস্থিতি তুলে ধরার মাধ্যমে জনগণকে সঠিকভাবে অবহিত করা জরুরি।
উপসংহার পরিশেষে বলব, যারা মনে করছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে, আমার মতে তারা গত ১৫ বছরে বাজারের ধারে কাছেও যাননি। তাদের কাছে মনে হতে পারে দাম বাড়তি, তবে যারা গত ১৫ বছর ধরে বাজার করে আসছি, আমরা জানি বাস্তবে দাম কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। বাজারে সিন্ডিকেটের মতো কারণগুলো সঠিকভাবে তুলে ধরা এবং অতিরঞ্জিত খবর না ছড়িয়ে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরাই গণমাধ্যমের দায়িত্ব।
আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলব, বাজারের পরিস্থিতি খুব একটা পরিবর্তিত হয়নি। কিছু পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে দাম কমেছে। এই বাস্তবতা জনগণের সামনে তুলে ধরলে বাজার নিয়ে জনমনে অযথা আতঙ্ক কমবে, এবং তারা বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন।
মন্তব্য নেই! একটি মন্তব্য লিখুন।