
শাহবাগ আন্দোলন: এক পক্ষপাতদুষ্ট রায় ও ইতিহাসের কালো অধ্যায়
একটি মঞ্চ, একটি রায় এবং এক পক্ষপাতদুষ্ট প্রহসন
২০১৩ সাল। বাংলাদেশ এক কঠিন সময় পার করছিল। একদিকে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচারের আশা করছিল, অন্যদিকে রাষ্ট্রের একটি অংশ পরিকল্পিতভাবে একটি বিশেষ বিচার প্রক্রিয়াকে সামনে নিয়ে আসছিল। ইতিহাসের পাতায় একে অনেকে বিচার বলে আখ্যা দিলেও বাস্তবতা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এটি ছিল এক পক্ষপাতদুষ্ট প্রহসন, যার লক্ষ্য ছিল দেশের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী-কে কলঙ্কিত করা।
একটি সাজানো নাটকের পটভূমি
আল্লামা সাঈদী, যিনি তার তাফসির ও ইসলাম প্রচারের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয় জয় করেছিলেন, তাকে যুদ্ধাপরাধের নামে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। অথচ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো নিয়ে তখন থেকেই বিতর্ক ছিল প্রবল। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা এবং দেশের বিশিষ্টজনরা এই বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
এই বিচারকে গণআন্দোলন হিসেবে উপস্থাপন করতে শাহবাগ আন্দোলন নামে একটি গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি করা হয়। এটিকে মূলত তরুণদের প্রতিবাদের একটি জায়গা হিসেবে দেখানো হলেও, বাস্তবিকভাবে এটি ছিল সরকারের একটি সুপরিকল্পিত প্রচারণা, যেখানে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে সংযুক্ত করা হয়।
ক্রিকেটারদের উপস্থিতি: না বোঝার ভুল নাকি চাপের ফল?
শাহবাগের আন্দোলনে বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের কয়েকজন খেলোয়াড়কেও দেখা যায়, যা অনেককে অবাক করেছিল। মুশফিকুর রহিম, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোহাম্মদ আশরাফুল, নাসির হোসেন, এনামুল হক বিজয়, সোহাগ গাজী, ইলিয়াস সানি ও মমিনুল হক—এরা সবাই শাহবাগের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
তবে প্রশ্ন থেকেই যায়—তারা কি আদৌ জানতেন, এই আন্দোলনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী? তারা কি স্বেচ্ছায় সেখানে গিয়েছিলেন, নাকি তাদের ওপর কোনো রকম চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল? সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক সত্যই উন্মোচিত হয়েছে, যা প্রমাণ করে, শাহবাগ আন্দোলন কোনো স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ছিল না, বরং এটি ছিল একটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত পরিকল্পনা।
একটি স্বৈরাচারী সরকার ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র
শুধু দেশীয় স্বার্থ নয়, আন্তর্জাতিক শক্তির মদদে এই বিচারকে প্রভাবিত করা হয়েছিল। বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি বিশ্বস্ততার জায়গা তৈরি করার বদলে, এটি হয়ে উঠেছিল একপক্ষীয় প্রতিশোধের হাতিয়ার।
ইতিহাস কি ভুলে যাবে?
একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে শাহবাগের এই আন্দোলন ও বিচার ইতিহাসের পাতায় চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে যখন প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হবে, তখনই মানুষ বুঝতে পারবে, কীভাবে একজন সম্মানিত ইসলামি চিন্তাবিদকে পরিকল্পিতভাবে কলঙ্কিত করা হয়েছিল।
উপসংহার
শাহবাগ আন্দোলন ছিল একটি সুপরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় প্রচারণা, যা বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার ওপর এক গভীর প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে। ইতিহাস কখনো মিথ্যা ঢেকে রাখতে পারে না। সময়ের সাথে সাথে সত্য প্রকাশ পাবে, এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানতে পারবে, কীভাবে একটি বিশেষ স্বার্থগোষ্ঠী দেশকে ভুল পথে পরিচালিত করেছিল।
মন্তব্য নেই! একটি মন্তব্য লিখুন।